প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঠাগারটি এ পর্যন্ত তিনটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৪ সালে এক টর্নেডোর আঘাতে পাঠাগারটি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়, ২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানুর’ আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাঠাগারটি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয় যায় সবকিছু। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পাঠাগারের পুরো চালা উড়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায় প্রায় ২ হাজার বই। অনেকগুলো আসবাবপত্র ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া পাঠাগারটি পুনরায় সংস্কার করে পাঠ উপযোগী করে তোলা হয়।
আমরা বিশ্বাস করি অন্ধকার দূর করতে হলে আলোর প্রয়োজন। যুগের পর যুগ যে জনপদটি অন্ধকারে ডুবন্ত, গোঁড়ামী আর রক্ষণশীলতায় আবদ্ধ, সেখানে আলো ছড়াতে হলে প্রদীপ লাগবেই। এখানে জ্ঞানের প্রদীপ-ই একমাত্র অন্ধকার ছেদ করে আলোর দ্যােতি ছড়াতে পারে। উপকূলীয় পাবলিক লাইব্রেরি হলো সেই জ্ঞানের প্রদীপ, জ্ঞানের বাতিঘর। আমরা স্থির করেছিলাম, আলো ছড়িয়ে দেব-অন্ধকার বিতাড়িত করব। যাত্রার শুরুতে আমরা একটি শ্লোগান নির্ধারণ করেছিলাম “অন্ধকারে আলোর প্রদীপ” আমরা সত্যিকার অর্থে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন জনপদে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পেরেছি। আমরা হাজারো তরুণ ও শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পেরেছি, তাদেরকে পড়ার প্রতি মনোযোগী করে তুলতে পেরেছি, যে জনপদের শিক্ষার্থীরা জীবনে পাঠ্যবই ছাড়া ভিন্ন কোনো বইয়ের দেখা পায়নি, সেখানে আমরা শতশত তরুণ-তরুণীর হাতে বই তুলে দিয়েছি, পাঠের প্রতি, পাঠাগারের প্রতি মনোযোগী করে তুলেছি। একটি শ্লোগানকে ধারণ করে ১৫ বছর আগে ক্ষুদ্র পরিসরে যাত্রা করা গণপাঠাগারকে ৯ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ এক গণপাঠাগারে রূপান্তরিত করেছি। বিগত একযুগে পাঠাগারের আশপাশ সংলগ্ন ৪টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পেরিছ, বইমুখী হয়েছে অনেক শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণী । সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে পাঠ কার্যক্রম ছড়িয়ে দিয়েছি দেশব্যাপী। আমাদের ভাবনা শুধু একটি জনপদে সীমাবদ্ধ নয়, নয় কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষে; আমাদের পথচলা সব মানুষের কল্যাণে, অন্ধকারের বিরুদ্ধে একটি সংগ্রামের, গোঁড়ামী দূর করে একটি মুক্ত ইতিহাস রচনার । এই পথচলা সীমাবদ্ধ নয় কোনো একটি সীমারেখায় ,জ্ঞানের বিশাল রাজ্যে নিজেদের সমৃদ্ধি অর্জনের জন্যই আমাদের বিরামহীন পথচলা ।
Copyright © 2024 II Design By : F.A.CREATIVE FIRM Ltd.